চারের কাজে আত্মনিয়োগ করেছে-যেমনঃ কেউ কোন বিষয়ে কুরআন হাদিস সংগ্রহ করে বই আকারে বিনামূল্যে বিতরণ করে । যারা কোন রকম হাদিয়া ছাড়াই ওয়াজ নছিহত করে, কোন এতিম খানা কোন গরীব সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়ানোর জন্য । যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে । ইত্যাদি ক্ষেত্রে যাকাত দেওয়া যাবে ।
৮) রাস্তার পথিকঃ ঐ মুসাফির যে এক স্থান হতে অন্য স্থানে বা দেশ হতে অন্য দেশে গেছে কিন্তু টাকার অভাবে নিজ গৃহে যেতে পারছে না । তাকে ঐ পরিমান যাকাত দেয়া হবে যাতে নিজের গৃহে ফিরে আসতে পারে । যদি কোথাও ধার কর্জ পায় তবে যাকাত নিতে পারবে না । পাপের সফরে চলবে না বরং কোন ওয়াজীব মুস্তাহাব বা মুবাহ কাজের জন্য হতে হবে ।
কতটা সাহায্য প্রয়োজন
ফকির মিসকীনদের জন্য খানা, পোষাক, বাসস্থান এবং অন্যান্য জিনিস যা ছাড়া বাঁচা সম্ভবপর নয়, তবে কোন অতিরিক্ত খরচ করা চলবে না । এর পরিমান নির্ধারণ করা সহজ নয় । কারণ যা এক ব্যক্তির চলে অন্যত্র অন্য ব্যক্তির চলবে না । যা এক জনের ১০ দিনের খরচ তা অন্য কারো ১ দিনের খরচ । তবে সর্বোত্তম ব্যবস্থা হল-অসুস্থের চিকিৎসার জন্য পুর্ণ খরচ দেওয়া, অবিবাহিতের বিবাহ খরচ দেয়া এবং যাকে যাকাত দেয়া হয় ভবিষ্যতে যাতে আর যাকাত নিতে না হয় এরকম ব্যবস্থা করে দেওয়া । যেমন-কোন কর্মের ব্যবস্থা করে দেয়া । এমন কিছু দেয়া যা দ্বারা সে আয় করে জীবিকা অর্জন করতে পারে । যেমন-রিক্সা, ভ্যান, অটোগাড়ী, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগীর খামার ইত্যাদি যাকাত হিসেবে দেওয়া যাতে তার আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে ।
সাহাবীরা এমন পরিমানে যাকাত দিতেন পরিবর্তীতে সে লোকের আর যাকাত নেওয়ার প্রয়োজন হয় নাই ।
খলীফা উমার (রাঃ) এর আমলে যাকাত বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এত সুন্দর ভবে রূপায়িত হয়েছিল যে, সারা দিন ঘুরেও যাকাত নেয়ার মত লোক খুজে পাওয়া যেত না । খলিফাহ উমার বিন আব্দুল আজিজ (রাঃ) এর সময়েও এরূপ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল । তিনি যাকাত নেবার লোক না পেয়ে শেষে আফ্রিকা মহাদেশে গিয়ে যাকাত বন্টনের আদেশ দিয়েছিলেন । ইসলামের আবির্ভাবের পর হতে চার খলীফাহ ও পরবর্তী কোন কোন খলীফাহর খিলাফত কালে যেভাবে যাকাত আদায় ও বন্টন করা হতো, বর্তমানে দুন্ইয়ার মুসলিম সরকারগুলো সরকারী ভাবে তদ্রুপ ব্যবস্থার প্রচলন করলে দুনিয়ার সকল মুসলিমদের অবস্থাই পরিবর্তন হয়ে যেত । কিন্তু নির্মম হলেও সত্য যে আজকের মুসলিম সমাজ কুরআনের এই নির্দেশ বর্জন করে চলছে ।
আমাদের যাকাত কে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে অনেকের মাঝে না বিলিয়ে আমাদের নিকটতম দরিদ্র আত্মীয় স্বজনকে বা সমাজের ফকির মিসকীনদের এমন ভাবে দিলে ভালো হবে যাতে তার আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে । কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় প্রতি বছরই তাদের যাকাতের জন্য দ্বারে দ্বারে যেতে হয় এবং তাদের অভাব অন্টনের কোন পরিবর্তন হয় না ।
যাকাত দেয়া যাবে নাঃ রাসুল (সাঃ) বলেছেন-ধনী বা কর্মক্ষম যারা তাদের এতে কোন অংশ নাই (আহমাদ, আবু দাউদ, নাসায়ী, মেশকাত হাদিস ১৭৩৮/১০)
বনু হাশেম গোত্রের হলে যাকাত দেওয়া যাবে না ।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন-নিশ্চয়ই যাকাত ও সদাক্বাহ মুহাম্মদ (সাঃ) এর বংশধরদের জন্য নয় (মুসলিম, মিশকাত হাদিস ১৭৩১/৩)